নোয়াখালীতে এক স্কুলের সহকারী শিক্ষিকার দায়ের করা ধর্ষণ মামলার আসামি প্রধান শিক্ষক জামিনে মুক্তি পেয়ে বাদিকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রাণনাশের হুমকি-দমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নির্যাতিতা বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
জানা যায়, বেগমগঞ্জের কিসমত আবদুল্লাহপুর গ্রামের মো. রুস্তম আলীর পুত্র ও উপজেলার জমিদার হাট রেডিয়ান্ট রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল হাসান।
তিনি দুই সন্তানের জনক। নারী লোভী এ প্রধান শিক্ষক একই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা রমিজা খাতুনকে স্কুলের ৪ তলায় তার বাসায় কথা আছে বলে ডেকে নেয়। রমিজা সহজ সরল মনে তার বাসায় যায়।
সেখানে যাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আবুল হাসান তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে রমিজা বিষয়টি অন্যন্য শিক্ষকদের কাছে প্রকাশ করবে বললে শিক্ষক আবুল হাসান তার হাত পায়ে ধরে তাকে বিয়ে করার অশ্বাস দেয়।
একইভাবে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে রমিজা গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এরপর রমিজা তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে কিন্তু আবুল হাসান কৌশলে তাকে গর্ভপাতের ওষধ দিয়ে গর্ভপাত ঘটায়।
এরই মাঝে নারী লোভী হাসান একই স্কুলের রহিমা আক্তার রুমি নামে এক অভিভাবিকার সাথে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি করে। তাকে বিয়ে করার জন্য তার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী জাহানারা বেগমকে নোয়াখালী নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তালাক দেয়। পরে রহিমা আক্তার রুমিকে বিয়ে করেন।
এদিকে, প্রতারণার শিকার সহকারি শিক্ষকা রমিজা খাতুন নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালে আবুল হাসানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে,মামলা নং-১১৪/২০। ওই মামলায় গত ৩ আগষ্ট বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
ভুক্তভোগী ওই স্কুল শিক্ষিকা জানান, জামিনে মুক্তি পেয়ে গত ১৫ নভেম্বর উপজেলায় বৈঠক শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় চৌমুহনী মোরশেদ আলম কমপ্লেক্সের সামনে মামলার আসামি ধর্ষক আবুল হাসান তাকে প্রকাশ্যে মামলা তুলে নিতে হুমকি হুমকি দেয়।
গত ১০ নভেম্বর আবুল হাসানের ভগ্নিপ্রতি আনোয়ার হোসেন স্থানীয় কাজির হাট বাজারে ভিকটিমকে অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে ১৯ নভেম্বর ভিকটিম বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি নং ১১৭৪।
এদিকে উক্ত প্রতিষ্ঠান শিক্ষিকার প্রায় দুই লাখ টাকা বেতন প্রাপ্য প্ররিশোধ করছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। পিতৃহারা ওই শিক্ষিকার একমাত্র আয় রোজগারে পরিবার ভরণ পোষণ চলে আসছে।
বর্তমানে ওই শিক্ষিকা ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।